গাজীপুরে পরকিয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে ৬ টুকরো
আলমগীর কবীর:
জিএমপি‘র কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় এলাকায় জামাল উদ্দিনের সেপটিক ট্যাঙ্কে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির হাত-পা-মাথা বিহীন মরদেহ পাওয়া যায়,গত ২১ এপ্রিল২০২১ইং।কাশিমপুর থানা এলাকার এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশ প্রাথমিক পর্যা য়ে পুলিশের ধারণা হয়েছিল,অন্যত্র হত্যা করে কেউ মরদেহটি এখানে ফেলে গেছে। পরে স্থানীয় বিভিন্ন সিসিটিভি ক্যামেরার সাতদিনের ফুটেজ দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে উদ্ধার করা মরদেহটি এ এলাকারই কারো। সিসিটিভি‘র ফুটেজ দেখে পুলিশের ধারণা পাল্টাতে থাকে,দুঢ়ভিসন্ধির জায়গাটা আস্তে আস্তে ভিন্নদিকে ধাবিত হতে থাকে,নিবিড় তদন্তে শেষ পর্যন্ত মুল ঘটনায় পৌছে যায় কাশিমপুর থানা পুলিশ ।
পুলিশ জানান,গত শনিবার (২৯ মে) ভোরে এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
গ্রেফতাররা হলেন,দিনাজপুরের চিরিবন্দর থানার নারায়ণপুর এলাকার আশরাফ আলীর মেয়ে আরিফা বেগম (২৪) ও তার প্রেমিক ফরিদপুরের মধুখালী থানার নরকোনা এলাকার আদিত্য সরকারের ছেলে তনয় সরকার (৩১)।নিহত সুমন বাগেরহাট জেলার চিতলমারি থানার গোলা বরননী এলাাকার জাফর মোল্লার ছেলে।
(৩০ মে) রোববার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. জাকির হাসান বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্যানুযায়ী,সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় ময়লার স্তুপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও করাত উদ্ধার করা হয়। এরপর একই এলাকার তেতুঁইবাড়ি মোজার মিল সংলগ্ন ময়লার ভাগাড় থেকে নিহতের খণ্ডিত পা ও মাথাসহ পাঁচ টুকরো দেহাংশ গলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি গ্রেফতার তনয় সরকারের বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতারদের বরাত দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান,দেড় বছর আগে সুমন বিয়ে করেন আরিফাকে।তবে বিয়ের আগেই আরিফা বেগমের প্রেম ছিল তনয়ের সঙ্গে। বিয়ের পরও তাদের প্রেম চলতে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে সুমন তার স্ত্রী ও তনয়কে একাধিকবার শাসন ও মারধর করেন। এ ঘটনার পর তারা দু’জন মিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
গত ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় আরিফা সুমনকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন। তিনি ঘুমিয়ে পড়লে আরিফা তনয়কে ডেকে আনেন। এরপর রাত ১২টায় বালিশচাপা দিয়ে সুমনকে হত্যা করে ঘরে রেখে দেন। পরের দিন করাত দিয়ে সুমনের মাথা, দুই হাত ও দুই পা বিচ্ছিন্ন করে এবং চাপাতি দিয়ে পেট কেটে ফেলেন তারা।
নিহতের হাত, পা ও মাথাবিহীন শরীর আরিফার ব্যবহৃত কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে পার্শ্ববর্তী জামাল উদ্দিনের বিল্ডিং এর সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেন এবং দেহ হতে বিচ্ছিন্ন করা পাঁচটি অংশ পলিথিন মুড়িয়ে চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ি মোজার মিল সংলগ্ন ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন।